কাজল চোখের মেয়ে

শোনো, কাজল চোখের মেয়ে,
আমার দিবস কাটে, বিবশ হয়ে,
তোমার চোখে চেয়ে।
দহনের দিনে কিছু মেঘ কিনে,
যদি ভাসে মধ্য দুপুর,
তবু মেয়ে জানে,
তার চোখ মানে,
কারো বুক পদ্মপুকুর।
এই যে মেয়ে,কাজল চোখ,
তোমার বুকে আমায় চেয়ে
তীব্র দাবীর মিছিল হোক।
তাকাস কেন?
আঁকাস কেন বুকের ভেতর আকাশ?
কাজল চোখের মেয়ে,
তুই তাকালে থমকে থাকে,
আমার বুকের বাঁ পাশ।
অমন কাজল চোখে তুমি
চেয়ো রোজ ওই চোখে
জীবনের হিসেব সহজ
তোমার চোখ চেয়েছি বলে,
এমন ডুবলো আমার চোখ,
অমন অথৈ জলে রোজ,
আমার ডুব সাঁতারটা হোক।
শোনো, কাজল চোখের মেয়ে,
আমি তোমার হবো ঠিক,
তুমি ভীষণ অকূল পাথার,
আমি একরোখা নাবিক
শোনো, জল ছলছল
কাজল চোখের কন্যা সর্বনাশী,
আমি তোমায় ভালোবাসি।
কুড়িয়ে নিয়েছি সব,
জমা ছিলো যত,
পুরনো স্মৃতির দিন,
বেদনার ক্ষত,
পিছুটান পিছে ফেলে সীমানা ছাড়াই,
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাঁড়াই।
উড়িয়ে দিয়েছি ঘুড়ি সুতোটুকু
কেটে পুড়িয়ে দিয়েছি চিঠি
জমা বুক পকেটে,
এখন পথিক হয়ে পথে পা বাড়াই,
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাড়াই?
আয়নায় জেগেছিলো কাজল দু চোখ,
লেগেছিলো লাল টিপ,
স্মৃতির সূচক,
তার সব ভেঙে কাঁচ দু পায়ে মাড়াই,
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাঁড়াই
মিছেমিছি মায়া, ছুঁয়ে দিলে ছায়া,
তবু পথ চাওয়া থেকে যায়,
ধুয়ে দিলে জল, চোখের কাজল,
কী জানি কী তবু রেখে যায়।
জল জমে থাকা কাঁচে,
জ্বর হয়ে থাকা আঁচে,
তুমিও থাকো অসুখের মতো কী ভীষণ ছোঁয়াচে!
যেতে হলে, এখুনি যাও,
পরে গেলে মায়া বেড়ে যাবে,
থেকে গেলে, এখুনি থাকো,
বেলাশেষে ছায়া বেড়ে যাবে।
এই যে এমন করে ফিরিয়ে দাও,
আমি চলে গেলে কে লিখবে কবিতা?
যদি বিদ্রোহ করে বসে চোখ,
কাজল না বসে আর চোখে?
যদি ম্লান হয় ঠোঁট, কবিতার শোকে!
যদি নীল শাড়ি রঙ ভুলে যায়,
উড়ে যায় সুগন্ধি চুল,
যদি মন হয় বরফের নদী,
মৃত্যুর বিষাদে ব্যাকুল।
আমি চলে গেলে,
জোছনায় কে হবে ভুল?
কে হবে ছায়ার মতো লীন,
তোমাতে আকুল!
এই যে ফিরে যাই অবহেলা বুকে,
ফিরে চাও? ডেকে বলো,থাকো?
তুমি ছাড়া কিছু নেই, আরতো কোথাও!
কবিতার খাতা যদি ফাঁকা থাকে,
ফাঁকা থাকে মন,
আমি ছাড়া তুমি তোমার কাজল চোখ,
বাঁচে কতক্ষণ? এবার ফিরাও তবে,
আমাকে হে নারী,
আমাতেই বেঁচে আছো তুমি,
আমাতেই বাড়ী।
তবে, আবার কবিতা হোক,
বুকে বুকে জাগুক আবার,
একজোড়া মায়াবতী নদী,
তোমার কাজল চোখ।
এমন জলের রাতে নদী হই যদি,
যদি তোমাকেই জমা রাখি বুক অবধি।
আধারের রঙ ছুঁয়ে তুমিও খানিক,
আমায় জমিয়ে রেখো বুকের বাঁ দিক!
সেখানে তোমার চিহ্ন,
যেখানে পেতেছি বুক,
ছিন্ন পালের নৌকো জেনেছে,
ভেসে যাওয়া কতটুক!
সেখানে তোমার সীমানা
যেখানে থেমেছি আমি,
তুমি ছাড়া আর সকলে জেনেছে,
তুমি অন্তর্যামী।
একটা তোমার মতো চাঁদের জন্য মেয়ে,
আমি জোছনা সকল হেলায় ভুলে থাকি,
একটা তোমার মতো মনের জন্য মেয়ে,
আমি হৃদয়টাকে যত্নে তুলে রাখি।

শেয়ার করুনঃ

প্রাসঙ্গিক

কৃপণ

আমি ভিক্ষা করে ফিরতেছিলেমগ্রামের পথে পথে,তুমি তখন চলেছিলেতোমার স্বর্ণরথে।অপূর্ব এক স্বপ্ন-সমলাগতেছিল চক্ষে মম-কী বিচিত্র শোভা তোমার,কী বিচিত্র সাজ।আমি মনে ভাবেতেছিলেম,এ

বাকি অংশ »

সীমালঙ্ঘন

আদর-প্রসঙ্গে আমি ইচ্ছে করে সীমারেখা লঙ্ঘন করেছিযাতে তুমি ক্রোধান্বিত রক্তজবা হয়ে যেতে পারোহঠাৎ নীরব হয়ে যাতে দূরে সরে যেতে পারো।

বাকি অংশ »

যেহেতু তুমিই বলেছিলে

যদিও-বা ক্লিওপেট্রা দেখা দিয়েছিল একবার,উদ্ভাসিত ছিল তার সবই;তবুও আঁকিনি আমি নাগলিঙ্গমের কোনো ছবি।আমি তো বলেছি শুধু নাগেশ্বর কুসুমের কথা;সাক্ষী আছে

বাকি অংশ »

সাম্প্রতিক সংযোজন

৩৩তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৪ মে

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি প্রবাসের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসবের নাম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আগামী ২৪ মে শুক্রবার থেকে

বাকি অংশ »

কবিতা, গান আর উৎসবে সাফল্য উদযাপন

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি পাওয়া ত্রিশজনকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে নিউইয়র্কে। প্রতি বছরের মতো এবারও ভিন্নধর্মী এমন অনুষ্ঠানের

বাকি অংশ »
Scroll to Top