তাঁর ছায়া তাঁরই মতো থাকে
উঠোন, বাগান, শান বাঁধানো ঘাটে
সন্ধ্যা যখন নামে
হাতের মুঠোয় কমলালেবু, কমলালেবুর ঘ্রাণে
দীর্ঘ চুলে গন্ধ-বাতাস খেলে
আমার তখন কী-ই বা এমন বয়স। রাত পোহালে
একটি কোয়া যত্ন ক’রে খাবো –
পাতে যখন পড়বে মাছের পেটি
নাকের ডগায় ঘামের বিন্দু মুছে
‘জলদি বাবা, বেলা অনেক হলো !’
বেলা অনেক হলো। এখন তাঁর চোখে
কতোই বড় আমি –
চশমা খুলে আঁচলে কাচ ঘসে
‘তোমার চুলেও পাক লেগেছে’
হাসির সঙ্গে মিলিয়ে ঠান্ডা ব্যথা
হাতের সুতো আলগা হ’য়ে আসে
ওড়া পাতায় সূ্র্য শেষের আলো
‘তোমার ভুরু বাবাজানের মতো।’
‘তোমার শখ, তোমার স্বাদ আর কে জানে বেশি, -‘
অনেক দূরে এসে – মেঘে-মেঘে আকাশ নিচু হলে
পানের পাতা ফোঁটার ভারে কাঁপে,
মোহ এবং মায়ার টানে
শোক-দুঃখ এক জীবনে উঁচু-নিচু হ’লে
প্রতীক্ষা আর জ্যোৎস্না নিয়ে হাঁটে;
সংকটে আর নিঃসঙ্গতার ষোলো তলায় ব’সে
আমি কেবল চিঠির পাতা খুলে
ভারী চোখে পড়ি: ‘তোমার মা’ !