বাবার হাতে বেশ জোর ছিলো
দুপুরবেলা নদী থেকে গোসল করে এসে
বারান্দায় কখনো ভাত খেতে বসে, তরকারীতে
নুন কম হওয়া নিয়ে—আমাদের উদ্দেশ্যে
যখন একটা চ্যালা কাঠ ছুঁড়ে দিতেন
ঐ তুচ্ছ কাঠের টুকরো বাতাসে কেমন
জঙ্গি বিমানের মত উড়তো
আমরা ভয়ে—বাবার কদমে সেজদা দিয়ে
আমাদের ক্ষমা করে দেবার জন্য
ফরিয়াদ জানাতে থাকতাম।
অনেকক্ষণ পর, বাবা যখন আমাদের প্রতি
ফেরাতেন তার সবিনয় সুদৃষ্টি—
আমরা অমনি বুঝে যেতাম জীবনের নিগূঢ় তাৎপর্য
আমাদের উপর পিতার রহমত বর্ষিত হতে থাকতো।
কোনো কোনো দিন বাবার মন ভালো থাকতো না
তখন চ্যালা কাঠের সাথে তিনি নিজেই উড়ে
আসতেন। সেদিন অস্থির আতঙ্কে
কাঁ প তে কাঁ প তে আমরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
দীর্ঘ সৌরবছর পর
জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারি—
বাবা এতোক্ষণ আমাদের নয়,
পিটাচ্ছিলেন তার দরিদ্রতাকে।