কোন এক মাকে


“কুমড়ো ফুলে ফুলে
নুয়ে পড়েছে লতাটা,
সজনে ডাঁটায়
ভরে গেছে গাছটা,
আর, আমি ডালের বড়ি
শুকিয়ে রেখেছি—
খোকা তুই কবে আসবি!
কবে ছুটি?”
চিঠিটা তার পকেটে ছিল,
ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।

“মাগো, ওরা বলে,
সবার কথা কেড়ে নেবে
তোমার কোলে শুয়ে
গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা, তাই কি হয়?
তাইতো আমার দেরী হচ্ছে।
তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে
তবেই না বাড়ী ফিরবো।
লক্ষ্মী মা রাগ ক’রো না,
মাত্রতো আর কটা দিন।”
“পাগল ছেলে” ,
মা পড়ে আর হাসে,
“তোর ওপরে রাগ করতে পারি!”
নারকেলের চিঁড়ে কোটে,
উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে
এটা সেটা আরো কত কি!
তার খোকা যে বাড়ী ফিরবে!
ক্লান্ত খোকা!

কুমড়ো ফুল
শুকিয়ে গেছে,
ঝ’রে প’ড়েছে ডাঁটা
পুঁইলতাটা নেতানো,
“খোকা এলি?”-
ঝাপসা চোখে মা তাকায়
উঠোনে, উঠোনে
যেখানে খোকার শব
শকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে।
এখন,
মা’র চোখে চৈত্রের রোদ
পুড়িয়ে দেয় শকুনিদের।
তারপর,
দাওয়ায় ব’সে
মা আবার ধান ভানে,
বিন্নি ধানের খই ভাজে,
খোকা তার
কখন আসে! কখন আসে!
এখন,
মা’র চোখে শিশির ভোর,
স্নেহের রোদে
ভিটে ভরেছে।

শেয়ার করুনঃ

প্রাসঙ্গিক

একুশে ফেব্রুয়ারি

একুশ আমার বোনের দুঃখমায়ের চোখের জল। একুশ আমার ভায়ের রক্তচির-সমুজ্জ্বল। একুশ আমার পিতার আক্রোশপুত্রের তাজা খুন। একুশ আমার অস্তিত্বের রথবাংলাদেশের

বাকি অংশ »

এই অক্ষরে

এই অক্ষর যেন নির্ঝরছুটে চলা অবিরামযেন কিছু তারা দিচ্ছে পাহারাআকাশেতে লিখে নাম।অক্ষরগুলি চায় মুখ তুলিঅন্তরে জাগে গান,শিখি তার কাছে অজানাযা

বাকি অংশ »

ফেব্রুয়ারির গান

দোয়েল কোয়েল ময়না কোকিলসবার আছে গানপাখির গানে পাখির সুরেমুগ্ধ সবার প্রাণ। সাগর নদীর ঊর্মিমালারমন ভোলানো সুরনদী হচ্ছে স্রোতস্বিনীসাগর সমুদ্দুর। ছড়ায়

বাকি অংশ »

সাম্প্রতিক সংযোজন

বনভূমির ছায়া

কথা ছিল তিনদিন বাদেই আমরা পিকনিকে যাব,বনভূমির ভিতরে আরও গভীর নির্জন বনে আগুন ধরাব,আমাদের সব শীত ঢেকে দেবে সূর্যাস্তের বড়

বাকি অংশ »

খিড়কি

খিড়কি ছিল পাশের বাড়িরখিড়কি ছিল মনেরখিড়কি ছিল যখন তখনখিড়কি কিছুক্ষণের । খিড়কি ছিল পথের পাশেহলুদ গাঁদাফুলের,খিড়কি ছিল আকাশ ভরামেঘের কালোচুলের

বাকি অংশ »
Scroll to Top