বাঁশ-বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,
মাগো আমার শোলক বলা কাজলা-দিদি কই?
পুকুর ধারে লেবুর তলে,থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে,
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই-
মাগো, আমার কোলের কাছে কাজলা-দিদি কই?
সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;
দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?
খাবার খেতে আসি যখন দিদি বলে ডাকি, তখন
ও-ঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো?
আমি ডাকি, -তুমি কেন চুপটি করে থাকো?
বল্ মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল বিয়ে হবে
দিদির মত ফাঁকি দিয়ে আমিও যদি লুকাই গিয়ে-
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন ক’রে রবে?
আমিও নাই-দিদিও নাই-কেমন মজা হবে।
ভূঁইচাঁপাতে ভরে গেছে শিউলী গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল;
ডালিম গাছের ডালের ফাঁকে বুলবুলিটা লুকিয়ে থাকে,
দিস না তারে উড়িয়ে মাগো ছিঁড়তে গিয়ে ফল,
দিদি এসে শুনবে যখন বলবি কি মা বল্ !
বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-
এমন সময় মাগো আমার কাজলা-দিদি কই?
লেবুর তলে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে;
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না তাইতো জেগে রই,-
রাত্রি হোল মাগো আমার কাজলা-দিদি কই?