ক্ষেত মজুরের কাব্য




মুগর উঠছে মুগর নামছে


ভাঙছে মাটির ঢেলা,


আকাশে মেঘের সাথে সূর্যের


জমেছে মধুর খেলা।





ভাঙতে ভাঙতে বিজন মাঠের


কুয়াশা গিয়েছে কেটে,


কখন শুকনো মাটির তৃষ্ণা


শিশির খেয়েছে চেটে।





অতটা খেয়াল রাখেনি কৃষক ,


মগ্ন ছিল সে কাজে ।


হটাৎ পুলক পবনও হৃদয়


পুষ্পিত হলো লাজে ।




ফিরিয়া দেখিল বধুটি তাহার


পিছনে আলের ‘পরে

ব
সে আসে যেন ফুটে আছে ফুল,


গোপনে চুপটি করে ।





সামনে মাটির লাল সানকিটি
জরির আঁচলে বাঁধা ,


আজ নিশ্চয় মরিচে রসুনে


বেগুন হয়েছে রাঁধা ।





হাঁসিয়া কৃষক মরাল বাঁশের


মোগর ফেলিয়া দিয়া


কামুক আঁখির নিবিড় বাঁধনে


বাধিল বধুর হিয়া ।





বরুন গাছের তরুণ ছায়ায়


দু’জনে সারিল ভোজ,


বধুর ভিতরে কৃষক তখন


পাইল মনের খোঁজ ।





মেঘ দিল ছায়া, বনও সঙ্গমে


পুড়িল বধুর আশা-; 


মনে যাই থাক, মুখে সে বলিলঃ


‘মর্গে’ বর্গা চাষা ।’





শব্দটি তার বক্ষে বিধিল


ঠিক বর্শার মতো

।

‘এই জমিটুকু আমার হইলে


কার কিবা ক্ষতি হতো ?’




কাতর কণ্ঠে বধুটি সুধালোঃ


‘আচ্ছা ফুলীর বাপ,


আমাগো একটু জমিন অবে না?


জমিন চাওয়া কি পাপ ?
’




‘খোদার জমিন ধনীর দখলে,


গেছে আইনের জোরে,


আমাগো জমিন অইব যেদিন


আইনের চাকা ঘোরে ।
’




অসহায় বধু জানে না নিয়ম


কানুন কাহারে বলে-;


স্বামীর কথায় আখি দুটি তার


সূর্যের মতো জ্বলে ।




বলদে ঘোড়ায় গাড়ির চাক্কা,


নাড়ীর চাক্কা স্বামী-;


আইনের চাক্কা আমারে দেখাও


সে-চাক্কা ঘুরামু আমি ।
’




কৃষক তখন রুদ্র বধুর


জড়ায়ে চরন দুটি ,


পা তো নয় যেন অন্ধের হাতে


লঙরখানার রুটি ।





যতটা আঘাত সয়ে মৃত্তিকা


উর্বার হয় ঘায়ে


ততোটা আঘাত সইল না তার


বধুর কোমল পায়ে ।





পা দু’টি সরায়ে বধুটি কহিলঃ


‘কর কি? কর কি? ছাড়ো,


আরে মানুষে দেখলে জমিন তো দেবি না, 


দুন্যাম দেবি আরও ।’





পরম সোহাগে কৃষক তখন

বধুর অধর চুমী ,

হাসিয়া কহিলঃ ‘ভূমিহীন কই?


আমার জমিন তুমি।’





আকাশে তখনও সূর্যের সাথে


মেঘেরা করিছে খেলা ,


মুগর উঠছে মুগর নামছে


ভাঙছে মাটির ঢেলা ।

শেয়ার করুনঃ

প্রাসঙ্গিক

আমি

আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ,
চুনি উঠল রাঙা হয়ে ।
আমি চোখ মেললুম আকাশে,
জ্বলে উঠল আলো
পুবে পশ্চিমে ।
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম

বাকি অংশ »

আসমানী


আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে

বাকি অংশ »

কৃপণ

আমি ভিক্ষা করে ফিরতেছিলেমগ্রামের পথে পথে,তুমি তখন চলেছিলেতোমার স্বর্ণরথে।অপূর্ব এক স্বপ্ন-সমলাগতেছিল চক্ষে মম-কী বিচিত্র শোভা তোমার,কী বিচিত্র সাজ।আমি মনে ভাবেতেছিলেম,এ

বাকি অংশ »

সাম্প্রতিক সংযোজন

৩৩তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৪ মে

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি প্রবাসের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসবের নাম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আগামী ২৪ মে শুক্রবার থেকে

বাকি অংশ »

কবিতা, গান আর উৎসবে সাফল্য উদযাপন

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি পাওয়া ত্রিশজনকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে নিউইয়র্কে। প্রতি বছরের মতো এবারও ভিন্নধর্মী এমন অনুষ্ঠানের

বাকি অংশ »
Scroll to Top