জীবনানন্দ দাশ
দুজন
‘আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন-কতদিন আমিও তোমাকেখুঁজি নাকো;- এক নক্ষত্রের নিচে তবু-একই আলোপৃথিবীর পারেআমরা দুজনে আছি; পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা
হায় চিল
হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরেতুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!তোমার কান্নার সুরে বেতের
আমি যদি হতাম
আমি যদি হতাম বনহংস,বনহংসী হতে যদি তুমি;কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারেধানক্ষেতের কাছেছিপছিপে শরের ভিতরএক নিরালা নীড়ে; তাহলে আজ এই
বোধ
আলো –অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরেস্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে !স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়,হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম
অনেক আকাশ
গানের সুরের মতো বিকেলের দিকের বাতাসেপৃথিবীর পথ ছেড়ে – সন্ধ্যার মেঘের রঙ খুঁজেহৃদয় ভাসিয়া যায়,- সেখানে সে কারে ভালোবাসে !-পাখির
পঁচিশ বছর পরে
শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে-বলিলামঃ ‘ একদিন এমন সময়আবার আসিও তুমি- আসিবার ইচ্ছা যদি হয়;পঁচিশ বছর পরে
স্থবির যৌবন
তারপর একদিন উজ্জ্বল মৃত্যুর দূত এসেকহিবে: তোমারে চাই-তোমারেই, নারী;এই সব সোনা রুপা মসলিন যুবাদের ছাড়িচলে যেতে হবে দূর আবিষ্কারে ভেসে।বলিলাম;
ফিরে এসো
ফিরে এসো সমুদ্রের ধারে,ফিরে এসো প্রান্তরের পথে;যেইখানে ট্রেন এসে থামেআম নিম ঝাউয়ের জগতেফিরে এসো; একদিন নীল ডিম করেছ বুনন;আজও্তারা শিশিরে
আট বছর আগে একদিন
শোনা গেল লাশকাটা ঘরেনিয়ে গেছে তারে;কাল রাতে ফাল্গুনের রাতের আধারেযখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাদমরিবার হল তার সাধ।বধু শুয়ে ছিল পাশে-শিশুটিও
আজকের এক মুহূর্ত
হে মৃত্যু,তুমি আমাকে ছেড়ে চলছ ব’লে আমি খুব গভীর খুশি?কিন্তু আরো খানিকটা চেয়েছিলাম;চারি দিকে তুমি হাড়ের পাহাড় বানিয়ে রেখেছে;–যে ঘোড়ায়
আকাশলীনা
সুরঞ্জনা, ঐখানে যেয়োনাকো তুমি,বোলোনাকো কথা অই যুবকের সাথে;ফিরে এসো সুরঞ্জনা:নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে; ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;ফিরে এসো
আবার আসিব ফিরে
আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে– এই বাংলায়হয়তো মানুষ নয়– হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের