তসলিমা নাসরিন
অভিমান
কাছে যতটুকু পেরেছি আসতে, জেনোদূরে যেতে আমি তারো চেয়ে বেশী পারি।ভালোবাসা আমি যতটা নিয়েছি লুফেতারো চেয়ে পারি গোগ্রাসে নিতে ভালোবাসা
বড় ভয়ে গোপনে গোপনে বাঁচি
মানুষের চরিত্রই এমনবসলে বলবে না, বসো নাদাঁড়ালে, কি ব্যাপার হাঁটোআর হাঁটলে, ছি: বসো।শুয়ে পড়লে ও তাড়া – নাও উঠো,না শুলে
যদি মানুষ হয়ে না পারি, পাখি হয়েও ফিরব একদিন
আমার জন্য অপেক্ষা করো মধুপুর নেত্রকোনাঅপেক্ষা করো জয়দেবপুরের চৌরাস্তাআমি ফিরব। ফিরব ভিড়ে হট্টগোল, খরায় বন্যায়অপেক্ষা করো চৌচালা ঘর, উঠোন, লেবুতলা,গোল্লাছুটের
চরিত্র
তুমি মেয়ে,তুমি খুব ভাল করে মনে রেখোতুমি যখন ঘরের চৌকাঠ ডিঙোবেলোকে তোমাকে আড়চোখে দেখবে।তুমি যখন গলি ধরে হাঁটতে থাকবেলোকে তোমার
দ্বিখন্ডিত
সে তোমার বাবা, আসলে সে তোমার কেউ নয়সে তোমার ভাই, আসলে সে তোমার কেউ নয়সে তোমার বোন, আসলে সে তোমার
টোপ
যেরকম ছিলে, সেরকমই তুমি আছকেবল আমাকে মাঝপথে ডুবিয়েছস্বপ্নের জলে উলটো ভাসান এতআমি ছাড়া আর ভাগ্যে জুটেছে কার! আগাগোড়া তুমি অবিকল
ব্যস্ততা
তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম, যা কিছু নিজের ছিল দিয়েছিলাম,যা কিছুই অর্জন-উপার্জন !এখন দেখ না ভিখিরির মতো কেমন বসে থাকি !কেউ ফিরে
হিসেব
কতটুকু ভালোবাসা দিলে,ক তোড়া গোলাপ দিলে,কতটুকু সময়, কতটা সমুদ্র দিলে,কটি নির্ঘুম রাত দিলে, কফোঁটা জল দিলে চোখের –সব যেদিন ভীষণ
ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত
ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত,তবু এখনো কেমন যেন হৃদয় টাটায়-প্রতারক পুরুষেরা এখনো আঙুল ছুঁলে পাথর শরীরবয়ে ঝরনার জল ঝরে।এখনো
দুঃখবতী মা
মা’র দুঃখগুলোর ওপর গোলাপ-জল ছিটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল,যেন দুঃখগুলো সুগন্ধ পেতে পেতে ঘুমিয়ে পড়ে কোথাওঘুমটি ঘরের বারান্দায়, কুয়োর পাড়ে কিম্বা
নষ্ট মেয়ে
ওরা কারো কথায় কান দেয় না, যা ইচ্ছে তাই করে,কারও আদেশ উপদেশের তোয়াককা করে না,গলা ফাটিয়ে হাসে, চেঁচায়, যাকে তাকে
ও মেয়ে শোনো
তোমাকে বলেছে –আস্তে, বলেছে –ধীরে.বলেছে –কথা না,বলেছে –চুপ।বলেছে– বসে থাকো,বলেছে– মাথা নোয়াও,বলেছে — কাঁদো। তুমি কি করবে জানো?তুমি এখন উঠে