বাঁচবো কি? আর কী করে বাঁচবো?
গাল ভরে হু হু কান্নার ঢেউ,
বুকের মধ্যে ছারখার জ্বালা
ফুলে ফুলে ওঠে,
গনগনে সীসে ঢালা ঝাঁঝাঁ কানে,
বালবের ছেঁড়া তারের মতোন
থরথর হাত।
ছড়ানো টেবিলে পড়ে আছে তার –
মা নেই আমার।
মনে পড়ে সেই তেরো বৎসর
আগে এক দূর ঝকঝকে গ্রামে
দু’চোখ অন্ধ, দমও বন্ধ,
দুপুরে দরজা হাতড়ে বেড়ানো –
বুকের খাঁচায় হাড়ে আটকানো
ময়নাটার সে পাখা ঝাপটানো।
তবু বেঁচে আছি।
সকালে নাশতা, দুপুরে আপিস
সন্ধ্যায় তাস, রাত্রে বালিশ,
মাঝে মাঝে ছুটি হাওয়া বদলানো,
ঘরোয়া তর্কে আকাশ ফাটানো।
কখনো বা ঢাকা কখনো করাচি।
সময়ের সীমাহীন দরিয়ায়
জীবন জাহাজ পাড়ি দিয়ে যায়,
চেনা মুখ ক্রমে স্মৃতির রেখায়
দিগন্তে সূর্যাস্তে মিলায়,
ফেলে চলে যায় জানা বন্দর,
হারায় পুরানো পাখির বহর,
সঙ্গী কেবল হাঙরের ঢেউ।
থামবে যেখানে সেখানে কি কেউ
গরম চায়ের বাটি হাতে করে
ঘাটে বসে আছে সারাদিন ধরে।
সেখানে কি কেউ অচেনা শহরে
হাত ধরে পথে নিয়ে যাবে ঘরে?
পড়ন্ত রোদে চোখ মেলে আজ
দেখি জীবনের বিশাল জাহাজ
ছোট হয়ে আসে। বারে বারে তাই
ভেজানো দরজা শুধু হাতড়াই।
যাবার জন্য প্রাণ উথলানো
সেই সময়টা থামছে না আর
যখন তখন আসছে আবার।