তোমার আছে দুর্গাপূজা, আমার আছে ঈদ!
তোমার যদি মন্দির, তো আমারটা মসজিদ।
তোমার আছে দেব দেবী আর তোমার ভগবান,
আমার আছে নবী-রাসূল, আল্লা মেহেরবান।
দেখতে তুমি আমার মতোই, তোমার মতোই আমি।
তবুও কেনো পরস্পরে যুদ্ধে আমরা নামি?
তফাতটা পাই নামের মধ্যে, পদ-পদবীর বেশে–
চট্টোপাধ্যায় – গঙ্গোপাধ্যায় তোমার নামের শেষে।
আমরা বসাই খান-আলী-শেখ কিংবা মোহাম্মদ।
একই রকম তোমার-আমার কৃষ্টি-পরিষদ।
খানাখাদ্যের মিল রয়েছে, মিল রয়েছে গানে।
তাকাই আমরা চন্দ্র-তারার একই আকাশ পানে।
তোমার আমার একই সূর্য, একই আঁধার-আলো।
তবুও কারা হানাহানির বিষের কৌটা ঢালো?
আমার রক্ত লাল টুকটুক, তোমারটা কি নীল?
সেখানটাতেও তোমার-আমার কী অপরূপ মিল!
তারপরেও সাম্প্রদায়িক আঁধার কেনো নামে?
তোমার আমার পার্থক্য? সেইটা শুধুই নামে।
তোমার মায়ের কপালে টিপ, সিঁথির সিঁদুর লাল!
আমার মা আর তোমার মা-তো বন্ধু চিরকাল।
তুমিও আমার বন্ধু-স্বজন, আমিও তোমার ভাই!
খেয়াল করো, তোমার-আমার কোনোই তফাৎ নাই।
একই রকম আমরা দু’জন- বাংলা মায়ের ছেলে!
অবিনাশী সম্প্রীতির এই প্রদীপ রাখি জ্বেলে।
একই রকম আমরা দু’জন- বাংলা মায়ের মেয়ে!
অন্ধকারে আলো ছড়াই বাংলার গান গেয়ে।
পাশাপাশি বাস করছি ‘মানুষ’ পরিচয়ে,
গুটিকতক সাম্প্রদায়িক কুলাঙ্গারের ভয়ে–
সেই পরিচয় যাই না ভুলে।
ভুলবো না, ভুলবো না-
বাংলা নামের নকশী কাঁথায় ‘সম্প্রীতি ফুল’ বোনা!
জড়িয়ে আছি জন্মাবধি আমরা ওতপ্রোত,
এই দেশটা আমার যেমন, তেমনি তোমারও তো!
লাল সবুজের এই পতাকায় রক্ত আছে মাখা!
পতাকার ঐ লাল সূর্য যৌথ রক্তে আঁকা।
আমরা বলি ভাইয়া আপু,তোমরা দাদা দিদি।
তিরিশ লক্ষ শহিদ, সেথায় যৌথ প্রতিনিধি।
আমরা বলি ফুপু-খালা, তোমরা পিসি-মাসী।
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি!’