ট্র্যাজেডি লাগে। নইলে মহাকাব্য সম্পূর্ণ হয় না।
আলপথ তোমাকে চিনতো, তুমি কোন বাড়ির ছেলে! কেরোসিন আলোর গ্রামগুলো তোমাকে জানে। রাস্তার মোড়ের বটগাছটাও দেখেছে, তুমি কতদূর হেঁটে যাও। নদীপাড়ের মানুষের গোচরীভূত- তোমার নৌকা সাঁতার কেটে এগিয়ে চলে নদীমাতৃক ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি পৃষ্ঠায়। যুদ্ধে যুদ্ধে সাতকোটি মানুষ একটি মানচিত্র এঁকেছে, তুমি সেই মানচিত্রের মহানায়ক। সংগ্রামে তোমার পাঁজর ভেঙেছে অনেক, তুমি ঠিকই উঠে দাঁড়িয়েছো। তোমার স্বপ্ন আরো সবল, সার্বভৌম হয়ে উঠেছে। আঘাতে তোমার রক্ত ঝরেছে অবিরল, তবু তুমি দাঢ্যতায় ঘুরে দাঁড়িয়েছো বারবার। তুমি বলেছো, ‘রক্ত আরো দেব…’ একটি রক্তাক্ত জনপদ তখন তোমার বুকের মধ্যে, বুকের মধ্যে বঙ্গোপসাগর, বুকের মধ্যে তখন একটি পতাকা, তোমার বুকটাই তখন স্বদেশী আকাশ- ইতিহাস নিজেই তখন তোমাকে গভীর পর্যবেক্ষণ করছে।
মহাকাব্য রচনা করে মানুষ। ঘরে ঘরে উচ্চারিত লোককথাই মহাকাব্য হয়ে যায়। কিন্তু ট্র্যাজেডি ছাড়া তো মহাকাব্য সম্পূর্ণ হয় না। সেই ট্র্যাজেডির জন্য তুমি ঢেলে দিলে তোমার সবটুকু রক্ত। তবে কি আমি ধরে নেব, মুক্তিযুদ্ধের সর্বশেষ শহীদ তুমি, তোমার পরিবার? মহাকাব্য সম্পূর্ণ হলো তোমারই বুকের রক্তে। মহাকাব্য পূর্ণ হলো নারী-শিশুদের রক্তে। তোমার অনুপস্থিতির তীব্রতাই এক চরম ট্র্যাজেডি এবং ট্র্যাজেডি ছাড়া মহাকাব্য সম্পূর্ণ হয় না।
প্রত্যেকদিন স্বপ্ন দেখি, আমাদের কেউ ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’- স্বপ্ন ছাড়া বেঁচে থাকা হয় না। যেমন, সন্তান ছাড়া মা হয় না, জঙ্গল ছাড়া বাঘ হয় না, মাঠ ছাড়া ধান হয় না, জলবিহীন মাছ হয় না, তুমি ছাড়াও বাংলাদেশ হয় না…
স্বাধীনতা বাঙালির
দেখি নাই আমি নেতাজি সুভাষ,মাও সে-তুং ,লেনিন।দেখা হয় নাই বীর ক্ষুদিরাম অথবা সূর্যসেন।দেখেছি কেবল শাসন – শোষণে মানুষ যে নির্জীবদেখেছি