লক্ষশিশু দেখছে আকাশ অন্ধকার
উদর স্ফীত, বিষ্ফোরিত চোখের ধার
যশোর রোডে-বিষন্ন সব বাঁশের ঘর
ধুঁকছে শুধু, কঠিন মাটি নিরুত্তর।
লক্ষ পিতা ভিজছে হিমেল বৃষ্টিতে
লক্ষ মাতা দু:খ দেখে দৃষ্টিতে
লক্ষ ভাইয়ের হৃদয় ধু ধু যন্ত্রণা
লক্ষ বোনের নেই কো ঘরের সান্ত্বনা।
লক্ষ মাসি ভাতের জন্য যায় মরে
লক্ষ মাতুল মাতাল হয়ে শোক করে
লক্ষ পিতামহের গৃহ চূর্ণপ্রায়
পিতামহী হচ্ছে পাগল নি:সহায়।
হাঁটছে পাঁকে লক্ষ পিতার কন্যারা
অবোধ শিশু ভাসিয়ে নিলো বন্যারা
লক্ষ মেয়ে করছে বমন আর্তনাদ
লক্ষ পরিবারের আশা চূর্ণ সাধ।
লক্ষ প্রাণের উনিশ শত একাত্তর
উদ্বাস্তু যশোর রোডে সব ধূসর
সূর্য জ্বলে ধূসর রঙে মৃতপ্রায়
হাঁটছে মানুষ বাংলা ছেড়ে কলকাতায়।
সিক্ত মিছিল হাঁটছে মানুষ নি:সহায়
ত্রস্ত ভীত ক্ষুব্ধ বালক থমকে চায়
স্তব্ধ আঁখি শীর্ণ দেহ অস্থিসার
মানববেশ এ ক্ষুধার্ত সব ফেরেশতার।
সীমান্তে আজ বানের পানি তা থৈ থৈ
সব ডুবেছে, খাদ্য দেবে পথটা কৈ?
মার্কিন সব দেবতারা কোথায় আজ?
বিমান থেকে শিশুর গায়ে ছুঁড়ছে বাজ?
রাষ্ট্রপতি কোথায় তোমার সৈন্যদল?
বিমানবহর নৌবাহিনী অর্থবল?
তারা কি আজ খাদ্য ওষুধ আনতে চায়?
ফেলছে বোমা ভিয়েতনামে নি:সহায়।
(অংশবিশেষ)