রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মাতৃবৎসল
মেঘের মধ্যে মা গো, যারা থাকেতারা আমায় ডাকে, আমায় ডাকে।বলে, ‘আমরা কেবল করি খেলা,সকাল থেকে দুপুর সন্ধেবেলা।সোনার খেলা খেলি আমরা
মনে পড়া
মাকে আমার পড়ে না মনে।শুধু কখন খেলতে গিয়ে হঠাৎ অকারণেএকটা কি সুর গুনগুনিয়ে কানে আমার বাজে,মায়ের কথা মিলায় যেন আমার
মাঝি
আমার যেতে ইচ্ছে করে নদীটির ওই পারে — যেথায় ধারে ধারে বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো বাঁধা সারে
সার্থক জনম আমার
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে ॥জানি নে তোর ধনরতন আছে কি না রানীর মতন,শুধু
বঙ্গমাতা
পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানেমানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানেহে স্নেহার্ত বঙ্গভূমি, তব গৃহক্রোড়েচিরশিশু করে আর রাখিয়ো না ধরে।দেশদেশান্তর-মাঝে যার
বিদায়
কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও।তারি রথ নিত্যই উধাওজাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন,চক্রে-পিষ্ট আঁধারের বক্ষ-ফাটা তারার ক্রন্দন।ওগো বন্ধু, সেই ধাবমান কালজড়ায়ে ধরিল
ভীরুতা
গভীর সুরে গভীর কথাশুনিয়ে দিতে তোরেসাহস নাহি পাই।মনে মনে হাসবি কিনাবুঝব কেমন করে?আপনি হেসে তাইশুনিয়ে দিয়ে যাই–ঠাট্টা করে ওড়াই সখী,নিজের
মিলন
জীবন-মরণের স্রোতের ধারাযেখানে এসে গেছে থামিসেখানে মিলেছিনু সময়হারাএকদা তুমি আর আমি।চলেছি আজ একা ভেসেকোথা যে কত দূর দেশে,তরণী দুলিতেছে ঝড়ে–এখন
শেষ বসন্ত
আজিকার দিন না ফুরাতেহবে মোর এ আশা পুরাতে–শুধু এবারের মতোবসন্তের ফুল যতযাব মোরা দুজনে কুড়াতে।তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারম্বার,তাহারি একটি
পূর্ণতা
১স্তব্ধরাতে একদিননিদ্রাহীনআবেগের আন্দোলনে তুমিবলেছিলে নতশিরেঅশ্রুনীরেধীরে মোর করতল চুমি–“তুমি দূরে যাও যদি,নিরবধিশূন্যতার সীমাশূন্য ভারেসমস্ত ভুবন মমমরুসমরুক্ষ হয়ে যাবে একেবারে।আকাশবিস্তীর্ণ ক্লান্তিসব শান্তিচিত্ত
প্রথম চুম্বন
স্তব্ধ হল দশ দিক নত করি আঁখি–বন্ধ করি দিল গান যত ছিল পাখি।শান্ত হয়ে গেল বায়ু, জলকলস্বরমুহূর্তে থামিয়া গেল, বনের
ধ্যান
নিত্য তোমায় চিত্ত ভরিয়াস্মরণ করি,বিশ্ববিহীন বিজনে বসিয়াবরণ করি;তুমি আছ মোর জীবন মরণহরণ করি।তোমার পাই নে কূল–আপনা-মাঝারে আপনার প্রেমতাহারো পাই নে