শামসুর রাহমান
কখনো আমার মাকে
কখনো আমার মাকে কোনো গান গাইতে শুনিনি।সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানিয়া গান গেয়েআমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কি না আজ
বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা
নক্ষত্রপুঞ্জের মতো জলজ্বলে পতাকা উড়িয়ে আছো আমার সত্তায়।মমতা নামের প্রুত প্রদেশের শ্যামলিমা তোমাকে নিবিড়ঘিরে রয় সর্বদাই। কালো রাত পোহানোর পরের
প্রিয় স্বাধীনতা
মেঘনা নদী দেব পাড়িকল-অলা এক নায়ে।আবার আমি যাব আমারপাড়াতলী গাঁয়ে।গাছ-ঘেরা ঐ পুকুরপাড়েবসব বিকাল বেলা।দু-চোখ ভরে দেখব কতআলো-ছায়ার খেলা।বাঁশবাগানে আধখানা চাঁদথাকবে
তুমি বলেছিলে
দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে নতুন বাজার।পুড়ছে দোকান-পাট, কাঠ,লোহা-লক্কড়ের স্তূপ, মসজিদ এবং মন্দির।দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে নতুন বাজার। বিষম পুড়ছে চতুর্দিকে
বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে
বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি, নিথর বিশাল,মাটি ফুঁড়ে জেগে ওঠে গভীর রাত্তিরে!মুখে শতাব্দীর গাঢ় বিশদ শ্যাওলা আর ভীষণ ফাটল,যেন
বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়
সারারাত নূর হোসেনের চোখে এক ফোঁটা ঘুমওশিশিরের মতো জমেনি, বরং তার শিরায় শিরায়জ্বলেছে আতশবাজি সারারাত, কী একভীষণ বিস্ফোরণ সারারাত জাগিয়ে
ধন্য সেই পুরুষ
ধন্য সেই পুরুষ, নদীর সাঁতার পানি থেকে যে উঠে আসেসূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে;ধন্য সেই পুরুষ, নীল পাহাড়ের চূড়া থেকে যে নেমে
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,তোমাকে পাওয়ার জন্যেআর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ? তুমি আসবে ব’লে,
আসাদের শার্ট
গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরবীর মতো কিংবা সূর্যাস্তেরজ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের শার্টউড়ছে হাওয়ায় নীলিমায় । বোন তার ভায়ের অম্লান শার্টে দিয়েছে লাগিয়েনক্ষত্রের
অভিশাপ দিচ্ছি
না,আমি আসিনিওল্ড টেস্টামেন্টের প্রাচীন পাতা ফুঁড়ে,দুর্বাশাও নই,তবু আজ এখানে দাঁড়িয়ে এই রক্ত গোধূলিতেঅভিশাপ দিচ্ছি। আমাদের বুকের ভেতর যারা ভয়ানক কৃষ্ণপক্ষ দিয়েছিলো
বন্দী শিবির থেকে
ঈর্ষাতুর নই, তবু আমিতোমাদের আজ বড় ঈর্ষা করি। তোমরা সুন্দরজামা পরো, পার্কের বেঞ্চিতে বসে আলাপ জমাও,কখনো সেজন্যে নয়। ভালো খাও
স্বাধীনতা তুমি
স্বাধীনতা তুমিরবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।স্বাধীনতা তুমিকাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানোমহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-স্বাধীনতা তুমিশহীদ মিনারে অমর একুশে