কামিনী রায়
নুরলদীনের সারা জীবন ( প্রস্তাবনা)
নিলক্ষা আকাশ নীল, হাজার হাজার তারা ঐ নীলে অগণিত আরনিচে গ্রাম, গঞ্জ, হাট, জনপদ, লোকালয় আছে ঊনসত্তর হাজার।ধবলদুধের মতো জ্যোৎস্না
গোলামের গর্ভধারিণী
আপনাকে দেখিনি আমি; তবে আপনি আমার অচেনানন পুরোপুরি, কারণ বাঙলার মায়েদের আমি মোটামুটি চিনি, জানি।হয়তো গরিব পিতার ঘরেবেড়ে উঠেছেন দুঃখিনী
সেই কবে থেকে
সেই কবে থেকে জ্বলছিজ্ব’লে জ্ব’লে নিভে গেছি ব’লেতুমি দেখতে পাও নি।সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছিদাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতিস্তম্ভের মতো ভেঙে পড়েছি
তোমার দিকে আসছি
অজস্র জন্ম ধরেআমি তোমার দিকে আসছিকিন্তু পৌঁছুতে পারছি না।তোমার দিকে আসতে আসতেআমার এক একটা দীর্ঘ জীবন ক্ষয় হয়ে যায়পাঁচ পঁয়সার
আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে
আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।আমার খাদ্যে ছিল অন্যদের আঙুলের দাগ,আমার পানীয়তে ছিল অন্যদের জীবাণু,আমার বিশ্বাসে ছিল অন্যদের ব্যাপক দূষণ।আমি জন্মেছিলাম
আত্মহত্যার অস্ত্রাবলি
রয়েছে ধারালো ছোরা স্লিপিং টেবলেটকালো রিভলবারমধ্যরাতে ছাদভোরবেলাকার রেলগাড়িসারিসারি বৈদ্যুতিক তার। স্লিপিং টেবলেট খেয়ে অনায়াসে ম’রে যেতে পারিবক্ষে ঢোকানো যায় ঝকঝকে
এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়
এ লাশ আমরা রাখবো কোথায় ?তেমন যোগ্য সমাধি কই ?মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলোঅথবা সুনীল-সাগর-জল-সব কিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই !তাইতো রাখি
আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর
আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো।তোমার খবরের জন্য যে আমি খুব ব্যাকুল,তা নয়। তবে ঢাকা খুবই ছোট্ট
ঈদ মোবারক
শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো,কত বালুচরে কত আঁখি-ধারা ঝরায়ে গো,বরষের পরে আসিলে ঈদ!ভুখারীর দ্বারে সওগাত ব’ইয়ে রিজওয়ানের,কন্টক-বনে আশ্বাস এনে
বাঙলাদেশের কথা (আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম)
যখন আমরা বসি মুখোমুখি, আমাদের দশটি আঙুল হৃৎপিন্ডের মতো কাঁপতে থাকেদশটি আঙুলে, আমাদের ঠোঁটের গোলাপ ভিজে ওঠে আরক্ত শিশিরে,যখন আমরা
সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিকসব সংঘ-পরিষদ; চলে যাবে, অত্যন্ত উল্লাসেচ’লে যাবে এই সমাজ-সভ্যতা-সমস্ত দলিলনষ্টদের
আমার কুঁড়েঘরে
আমার কুঁড়েঘরে নেমেছে শীতকালতুষার জ’মে আছে ঘরের মেঝে জুড়ে বরফ প’ড়ে আছেগভীর ঘন হয়ে পাশের নদী ভ’রেবরফ ঠেলে আর তুষার