জসীম উদ্দীন
প্রণয়
তোমার প্রসঙ্গ উঠে আসে, পুষ্প-ফোটা উদ্যানে উদ্যানেআমি তো আহত হই, বসন্তের সুমিষ্ট সুবাসে।আমি তো গিয়েছি ভুলে ওই মুখ, আজ আর
যে-মানুষকে ভুলেছে সবাই
রাজা এবং নেতার চলার পথের পাশে অন্তরের দীনতায় ক্ষুদ্র ঘাসের মতো অস্তিত্ব আমার। শক্তিমানের স্বপ্নে প্রসারিত পথের পাশে নিরন্তর সময়ের
শাস্তিপ্রিয় মেষপালক
স্বর্গ যদি আসে নেমেচারণভূমিতেআমি হেলে বসিদুই তারার মূর্তিতে আমি ভুলে যাই ওসবভাবি আমি নিয়মের মুকুটব্যবসার পালস্না আর সত্যের সীমাখুব কঠিন
নীল প্রজাপতির দিন
আজ বসন্তে এসেছে এক নীল প্রজাপতি দিনএবং তাদের ডানায় ডানায় বিক্ষোভতাদের ডানায় অমিশ্রিত বর্ণযদি ত্বরায় না যায় সে, মেটাবে তাদের
আগুন ও বরফ
কেউ বলে এই পৃথিবী ধ্বংস হবে আগুনেকেউ বলে বরফেআমার কিছু আকাঙ্ক্ষা আছে বলায়আমি তারই সাথে যে-আগুনের পক্ষেকিন্তু আমার মনে হয়
যে-রাস্তায় যাইনি
দুটি পথ গেছে বেঁকে দুটি হলুদ বনেএকটি মাত্র পথিক হলেযতদূর যায় চোখ চেয়ে রইলাম একদৃষ্টেযেখানে গুল্মময় এক ঝোপ গেছে বেঁকে
একটি খোলাভীতি
আমি বসে আছিযেন মনে হয় সর্বদাহাডসনের তীরে আছিএবং অনেক দূরের কোনো বিষয়একটি ছোট খাদিএবং একটি পায়েচলা পথ ছাড়াআর কিছু নয়
স্বাধীনতা তুমি
স্বাধীনতা তুমিরবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।স্বাধীনতা তুমিকাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানোমহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-স্বাধীনতা তুমিশহীদ মিনারে অমর একুশে
যদি তুমি ফিরে না আসো
তুমি আমাকে ভুলে যাবে, আমি ভাবতেই পারি না।আমাকে মন থেকে মুছে ফেলেতুমিআছো এই সংসারে, হাঁটছো বারান্দায়, মুখ দেখছোআয়নায়, আঙুলে জড়াচ্ছো
বারবার ফিরে আসে
বার বার ফিরে আসে রক্তাপ্লুত শার্টময়দানে ফিরে আসে, ব্যাপক নিসর্গে ফিরে আসে,ফিরে আসে থমথমে শহরের প্রকাণ্ড চোয়ালে।হাওয়ায় হাওয়ায় ওড়ে, ঘোরে
আমার মৃত্যুর পরেও যদি
একটি পাখী রোজ আমার জানালায়আস্তে এসে বসে, তাকায় আশেপাশে।কখনো দেয় শিস, বাড়ায় গলা তার;আবার কখনোবা পাখাটা ঝাপটায়। পালকে তার আঁকা
কখনো আমার মাকে
সংসারে এসেও মা আমার সারাক্ষণছিলেন নিশ্চুপ বড়ো, বড়ো বেশি নেপথ্যচারিণী। যতদূরজানা আছে, টপ্পা কি খেয়াল তাঁকে করেনি দখলকোনোদিন। মাছ কোটা