মহাদেব সাহা
তুমি: বিশ বছর আগে ও পরে
তুমি যে-সব ভুল করতে সেগুলো খুবই মারাত্মক ছিল। তোমার কথায় ছিল গেঁয়ো টান, অনেকগুলো শব্দের করতে ভুল উচ্চারণ: ‘প্রমথ চৌধুরী’কে
কোনো এক নারীর জন্য
চৈত্রের এক মধ্যরাতেবুকের কপাট খুলে দু’বাহু বাড়িয়েআমি অপেক্ষা করছিলামকোনো এক নারীর জন্যে…কৃষিজমিতে দাঁড়িয়েযে রকম অপেক্ষা করে উন্মুখ কৃষকফসল-ফলানো বৃষ্টির জন্যে—আমি
জীবন একটি নদীর নাম
জীবন একটি নদীর নাম,পিতামাতার ঐ উঁচু থেকেনেমে-আসা এক পাগলা ঝোরা—ক্রমশ নিম্নাভিমুখী;পাথুরে শৈশব ভেঙেকৈশোরের নুড়িগুলি বুকে নিয়েবয়ে চলা পরিণামহীনএক জলধারা—গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে
বৃষ্টি
খররৌদ্রময় এই দিন—শ্যামল বাংলায় বুঝি ফের নেমে আসে খরা!খরতাপে রুদ্ধশ্বাসক্ষুদ্র এই গ্রামীণ শহর,এ রকম এই দিনে চেতনায়ও খরার প্রদাহ—নির্বাচনে হেরে-যাওয়া
নগর ধ্বংসের আগে
নগর বিধ্বস্ত হ’লে, ভেঙ্গে গেলে শেষতম ঘড়িউলঙ্গ ও মৃতদের সুখে শুধু ঈর্ষা করা চলে।‘জাহাজ, জাহাজ’ – ব’লে আর্তনাদ সকলেই করি
যাও, পত্রদূত
যাও পত্রদূত, বোলো তার কানে-কানে মৃদু স্বরেসলজ্জ ভাষায় এই বার্তা: “কোমল পাথর, তুমিসুর্যাস্তের লাল আভা জড়িয়ে রয়েছো বরতনু;প্রকৃতি জানে না
ভাত দে হারামজাদা
ভীষণ ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপেঅনুভূত হতে থাকে- প্রতিপলে- সর্বগ্রাসী ক্ষুধাঅনাবৃষ্টি- যেমন চৈত্রের শষ্যক্ষেত্রে- জ্বেলে দ্যায়প্রভুত দাহন- তেমনি ক্ষুধার জ্বালা,
যদি ভালোবাসা পাই
যদি ভালোবাসা পাইআবার শুধরে নেবো ভুলগুলি ;যদি ভালোবাসা পাইব্যাপক দীর্ঘপথে তুলে নেব ঝোলাঝুলি।যদি ভালবাসা পাইশীতের রাতের শেষে মখমল দিন পাব;যদি
চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া
স্পর্শকাতরতাময় এই নামউচ্চারণমাত্র যেন ভেঙে যাবে,অন্তর্হিত হবে তার প্রকৃত মহিমা,-চুনিয়া একটি গ্রাম, ছোট্ট কিন্তু ভেতরে-ভেতরেখুব শক্তিশালীমারণাস্ত্রময় সভ্যতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। মধ্যরাতে
তোমার কথা ভেবে
তোমার কথা ভেবে রক্তে ঢেউ ওঠে—তোমাকে সর্বদা ভাবতে ভালো লাগে,আমার পথজুড়ে তোমারই আনাগোনা—তোমাকে মনে এলে রক্তে আজও ওঠেতুমুল তোলপাড় হূদয়ে
প্রতীক্ষা
এমন অনেক দিন গেছেআমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থেকেছি,হেমন্তে পাতা-ঝরার শব্দ শুনবো ব’লেনিঃশব্দে অপেক্ষা করেছি বনভূমিতে-কোনো বন্ধুর জন্যেকিংবা অন্য অনেকের জন্যেহয়তো
ফুলবাজার
পদ্ম, তোর মনে পড়ে খালযমুনার এপার ওপাররহস্যনীল গাছের বিষাদ কোথায় নিয়ে গিয়েছিল? স্পষ্ট নৌকো, ছৈ ছিল না, ভাঙা বৈঠা গ্রাম