ঘরে ফেরা কি এতটা কঠিন?
ঘর তো আর আকাশ নয়, ফিরতে গেলে পাখি হতে হয়।
পাখির মতো দুটো ডানা থাকতে হয়।
পায়ে হেঁটে এত দূরেও যাওয়া যায় অভিরূপ?
যেখান থেকে ফিরতে গেলে আকাশ পেরুতে হয়?
শূন্য অপেক্ষায়ও একটা খাঁ খাঁ নক্ষত্রের তাপ থাকে অভিরূপ
তুমি কখনও বুঝবে না অপেক্ষার শূন্যতা একটা মানুষকে যে
কী ভীষণ নিঃস্ব করে দিতে পারে।
যেখান থেকে জীবনের দিকে তাকালে মৃত্যুকেও প্রিয় মনে হয়।
অথচ প্রত্যেক দিন এই ক্ষতবিক্ষত শূন্যতার ভিতর আমি
ফোঁটায় ফোঁটায় ছড়িয়ে পড়তে দেখছি আমার নিজের শরীর।
অপেক্ষার যন্ত্রণাকে তুমি কখনও অনুভব করেছ অভিরূপ?
যে পাখিটাকে এনে তুমি আমার বুকের মধ্যে পুষে রেখেছিলে
তোমাকে না ছুঁতে পারার কষ্টে যন্ত্রণায় তার পাখা থেকে
রোজ খসে পড়ছে একটা একটা করে পালক।
আর সেই পালকের উপর জন্ম নিচ্ছে অসংখ্য উপজীবী ছত্রাক।
এমন নৃশংসতার সাথে খেয়ে ফেলছে ওরা পালকের সবটুকু উড়ান
পাখিটার বেঁচে থাকার কথা ভাবতে গিয়েই আমার কান্না পায়।
যে চোখে জলের ফোঁটা দেখলে স্বর্ণমুদ্রা বলে রুমালে কুড়িয়ে নিতে
সে চোখের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত এখন
অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো দাপিয়ে বেড়ায় তেরোটা নদী।
তাদের অবাধ্য স্রোত খড়কুটোর মতো ভাসিয়ে নিয়ে যায়
আমার বেঁচে থাকার লক্ষ লক্ষ দিন, আমার ভালো থাকার অসংখ্য সময়।
সাধারণ মেয়েদের কোনো পুনর্জন্ম থাকে না।
অপেক্ষার জীবাশ্ম বয়ে বয়ে যে ভালবাসা আজ আমার রক্ত প্রবাল
আমি কিছুতেই তাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দিতে পারব না অভিরূপ।
আমি বাঁচব অভিরূপ মৃত্যুর পাঁজরে পাঁজরে আমি বাঁচব
তুমি যতদিন বেঁচে আছো।