এখনও দুধের দাঁত পড়েনি , এরই মধ্যে
আইয়ুব খানের দাঁত দেখাচ্ছ ?
ভাবছো এতেই চলে যাব ?
না , চলে যাবার জন্য আমরা আসিনি ।
আমরা পুঁজিবাদের পথের কাঁটা ,
আমরা রক্তচোষা জোঁকের মুখে থুথু ,
আমরা যাবো না ।
এইতো শোষণের পথ আগলে
আমরা বসলাম , দেখি কী করতে পারো ।
কাঁদানে-গ্যাস ছুঁড়বে ? ছোঁড় ।
এমনিতেই লাল হয়ে আছে
আমাদের চোখ , কাঁদানে-গ্যাসে
সে আর কত লাল হবে ?
গুলি চালাবে ? চালাও না ।
আমরা অনেকবার মরেছি ,
আবার মরব ।
আমাদের তো অস্ত্র নেই ,
মৃত্যুই আমাদের অস্ত্র ।
আমরা সশস্ত্র হব অজস্র-মৃত্যুতে ।
তবু আমরা মরব না ।
আমরা টিপু পাগলার আল্লাহ্র জমি
আমরা তীতুমীরের বাঁশেরকেল্লা ,
আমরা সূর্যসেনের বীর চট্টলা ;
আমরা যাব না ।
আমরা টংক-বিদ্রোহের নিহত হাজং
সুরেন্দ্র , রহিম , রাসমণি ,
আমরা নাচোলের ইলা মিত্র , মাতলা সর্দার ।
আমরা যাবো না ।
আমরা বায়ান্নর রফিক-সালাম-বরকত ।
আমরা একাত্তরের তিরিশ লক্ষ ,
আমরা শেখ মুজিবের শেষ দীর্ঘশ্বাস ।
আমরা যাবো না ।
আমরা ভূমিহীন ক্ষেত মজুরের ক্ষুধা ,
আমরা ইতিহাস-খ্যাত দুনিয়ার মজদুর ।
আমরা কাজ না পাওয়া বেকার যৌবন ,
আমরা বেশ্যাপল্লীর আনন্দকুসুম ,
আমরা ধর্ষিতা মনুবালা , নিহত দীপন ।
আমরা যাবো না ।
আমরা বন্ধনহারা কুমারীর বেণী
তন্বীনয়নে বহ্নি ;
আমরা অগ্নির মুখে প্রতিবাদী লোহা
লাল টকটকে রক্ত ।
আমরা নাম না-জানা গায়েবী শহীদ ।
আমরা যাবো না ।
আমরা ভিয়েতনামের দিয়েন বিয়েন ফু ,
আমরা সাবরা শাতিলার বীর ফিলিস্তিনী ,
আমরা স্ট্যালিনগ্র্যাডে হিটলারের কবর খুঁড়েছি ,
আমরা দুনিয়া কাঁপানো দশদিন ।
আমরা যাবো না ।
আমরা কেন যাবো ?
কেন যাবো ?
কেন ?
আমরা ছিলাম ,
আমরা আছি ,
আমরা থাকব।
ক্ষেত মজুরের কাব্য
মুগর উঠছে মুগর নামছে ভাঙছে মাটির ঢেলা, আকাশে মেঘের সাথে সূর্যের জমেছে মধুর খেলা। ভাঙতে ভাঙতে বিজন মাঠের কুয়াশা গিয়েছে কেটে, কখন শুকনো মাটির তৃষ্ণা শিশির