ভাসান যে দিতে চাও, কোন দেশে যাবা? যাবা সে কোন বন্দরে আমারে একলা থুয়ে? এই ঘর, যৈবনের কে দেবে পাহারা?
এমন কদম ফুল-ফোটা ফুল থুয়ে কেউ পরবাসে যায়!
তুমি কেন যেতে চাও বুঝি সব, তবু এই পরান মানে না।
লোকে কয় ভিন দেশে মেয়ে মানুষেরা নাকি বেজায় বেহায়া,
শরীরের মন্ত্রদিয়ে আটকায় সাদা-সিদে পুরুষ মানুষ।
তোমারে না হারাই যেন সেই দিব্যি দিয়ে যাও জলের কসম,
আর বলি মাস মাস খোরাকি পাঠাতে যেন হয় নাকো দেরি।
পুবের না পশ্চিমের দেশ, কোন দেশে যাবা মাঝি, কোন দেশ? সেখানে কেমন জানি লোকজন, মানুষের আচার বিচার!
শুনেছি দক্ষিণে ভয় আজদাহা দরিয়ার বেশুমার খিদে,
পাহাড় সমান ফণা আচমকা টেনে নেয় পেটের ভেতর।
দক্ষিণে যেও না মাঝি, কালাপানি দরিয়ায় কামোট কুমির।
তোমারে হারাই যদি গলায় কলসি বেঁধে ডুব দেবো জেনো,
তোমারে হারাই যদি ধুতুরার বিষ খেয়ে জুড়োবো পরান।
পরবাসে যাবা মাঝি, মনে ভেবো ভরা গোলা রেখে গেছ ঘরে-
সোমত্ত বয়স দেহে মাঝি-বউ দিন গোণে, ফেরে না ভাতার,
গলায় কলসি বাঁধা হয় নাকো তার। পেটের আগুনে পোড়ে
অতপর ঘরদোর, সোনার গতর আর সব শেষে পোড়ে
তার যৌবনের কড়ি। মাঝি-বউ দিন গোণে, তবু দিন গোণে…