ময়ূরপঙ্খী 

মেয়ে হলে কি নাম রাখতে?
কি নাম, কি নাম, কি নাম রাখতাম-
ময়ূরপঙ্খী।

কম করে উনিশজন কবি, লেখক, অধ্যাপক বলেছেন-
“বুঝলে এক ছেলে ছেলে নয়, তোমার একটা মেয়ে দরকার”
ছেলে খারাপ হলেও বিপদ, ছেলে ভাল হলেও বিপদ।
খারাপ হলে সারা পাড়া অভিশাপ দেবে,
ভাল হলে আমেরিকা কেড়ে নেবে।

মেয়ে হলে নাম রাখতাম ময়ূরপঙ্খী
ভুল বললাম, নাম রাখব ময়ূরপঙ্খী।
ছোট্ট ছোট্ট পা, ছোট্ট ছোট্ট হাত-
টলমল করে এগিয়ে আসছে সে আমার দিকে।

ময়ূর, মা তাই আমাকে ভালবাসবি তো, ছেড়ে যাবি নাতো।

“অ্যাপ্লাই করেছ? ” – জিজ্ঞেস করল সমস্বরে তিনজন।
আমি বললাম, দেখেও এসেছি,
যেকোনো দিন টেলিফোন এলে
ছুটে গিয়ে তুলে আনব ময়ূপঙ্খীকে
চুমোয় চুমোয় তাকে ভরিয়ে তুলবো
সে তার চার বছরের দাদা রোরোবাবুর সঙ্গে
কাদা হয়ে ঘুমিয়ে থাকবে।

“অ্যাপ্লাই করেছ?”। মাত্র দুটি শব্দ দুটি ধ্বনি
এত তীক্ষ্ণ কখনও লাগেনি।

রাত্রে ঘুমের মধ্যে বহুদূর থেকে
প্রতিধ্বনি এসে জিজ্ঞেস করল-
“অ্যাপ্লাই করেছ? আমার জন্য তুমি অ্যাপ্লাই করেছ?”

হাওড়া, শেয়ালদা, চৌরঙ্গী, কালীঘাট, শোভাবাজারের
ফুটপাত থেকে ছোট্ট ছোট্ট কচি হাত,
হাজার হাজার হাত উঠে এল ঘুমের ভেতর,
“আমার জন্য তুমি অ্যাপ্লাই করেছ?”

বাকি রাত উঠে বসে থাকি, আমার সামনে কাকভোর,
ফুটপাত আর ফুটপাত।
ঘুমিয়ে আছে এক ভারতবর্ষ ময়ূরপঙ্খী।
আমরা কি পারি না, হোম থেকে,
রাস্তা থেকে, ফুটপাত থেকে
একটি করে ময়ূরপঙ্খী ঘরে তুলে আনতে, পারি নাকি।

শেয়ার করুনঃ

প্রাসঙ্গিক

একটি দুর্বোধ্য কবিতা

এবার লক্ষ্মীশ্রী মুছে গেছেলেগেছে কি তীব্র রূপটানএইবার পথে বেরোলেইসকলের চক্ষু টানটানবাড়ি ফিরে সেই এক সংসারসেই এক সাধারণ স্বামীআজ শান্ত, কাল

বাকি অংশ »

মৃণালের পত্র

সেই ছুটুবেলাতে আমাদেরপাহাড় কোলের জোড়েলদী পেরাতে যাইয়েএক আষাঢ় মাসের হড়কা বানেআমি আর আমার ভাইভাস্যে গেছলম বানের তোড়েভাইটি গেল ডুবে আমি

বাকি অংশ »

সাম্প্রতিক সংযোজন

বনভূমির ছায়া

কথা ছিল তিনদিন বাদেই আমরা পিকনিকে যাব,বনভূমির ভিতরে আরও গভীর নির্জন বনে আগুন ধরাব,আমাদের সব শীত ঢেকে দেবে সূর্যাস্তের বড়

বাকি অংশ »

খিড়কি

খিড়কি ছিল পাশের বাড়িরখিড়কি ছিল মনেরখিড়কি ছিল যখন তখনখিড়কি কিছুক্ষণের । খিড়কি ছিল পথের পাশেহলুদ গাঁদাফুলের,খিড়কি ছিল আকাশ ভরামেঘের কালোচুলের

বাকি অংশ »
Scroll to Top